ফজরের নামাজ কয় রাকাত,ফরজের নামাজের নিয়ত এবং জামাতে শামিল হওয়ার নিয়ম
ফজরের নামাজ কয় রাকাত:
ফজরের নামাজ মোট চার রাকাত দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহে।দুই রাকাত ফরজ ।
ফজরের দুই রাকাত সুন্নতের নিয়ত :
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাআতাই সলাতিল ফাজরি রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
বাংলা নিয়ত: আমি ক্যাবলামুখী হইয়া আল্লাহর জন্য ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করতেছি, আল্লাহু আকবার।
ফজরের দুই রাকাত ফরজের নিয়ত:
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহে তা’আলা রাকাআতাই সলাতিল ফাজরি ফারদুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতিন আল্লাহু আকবার।
বাংলা নিয়ত: আমি ক্যাবলামুখী হইয়া আল্লাহর জন্য ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায়ের নিয়ত করতেছি আল্লাহু আকবার
জামাতের সাথে ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করা হলে নিয়ত করার সময় ফারদুল্লাহি তা’আলা এরপর বলতে হবে ইকৃতাদাইতু বিহা-যাল ইমাম । অতঃপর বাকি অংশ বলবে।
একাকী ফরজের নিয়ত করার পর জামাত শুরু হলে করণীয়:
মসজিদ কিংবা অন্য কোথাও একাকি ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত করার পর নিকটে কয়েকজন মিলে যদি জামাতে দাঁড়ায় এমন তা অবস্থায় আপনি যদি দ্বিতীয় রাকাতের সিজদা না করে থাকেন তাহলে নামাজে যে অবস্থায় থাকবেন সে অবস্থায় ডান দিকে এক সালাম দিয়ে নামাজ ভঙ্গ করে জামাতে শরিক হয়ে যাবেন।
আর যদি দ্বিতীয় রাকাতে সিজদা করে থাকেন তাহলে ওই নামাজ একাকী পূর্ণ করবেন। এ অবস্থায় জামাতে শরিক হবেন না।
ফজরের ফরজ নামাজ একাকী আদায় করার সময় সুরা কিরাআত উচ্চ সরেও পাঠ করা যায় এবং অনুচ্চ সরেও পার্ট করা যায়।
নামাজের শেষ বৈঠকে না বসে দাঁড়িয়ে গেলে করণীয়:
কেউ যদি ফজরের দুই রাকাত সুন্নত বা ফরজ নামাজের দ্বিতীয় রাকাতে( শেষ বৈঠকে) তাশাহুদ পাঠ করা পরিমাণ সময় বসার পর ভুলক্রমে তৃতীয় রাকাতের জন্য সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে যায় তাহলে স্মরণ হওয়া মাত্র বসে যাবে, যদিও সুরা কিরাআত পাঠ করে থাকে বা রুকুও করে থাকে। বসে ডান দিকে সালাম ফিরায় সাহু সিজদা করবে।
তারপর আবার আত্তাহিয়াতু, দরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করে উভয় দিকে সালাম ফিরায় নামাজ শেষ করবে।
উল্লেখিত অবস্থায় যদি ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত করা হয়ে থাকে তাহলে দুই রাকাত ফরজ আদায় হয়ে যাবে, আর এক রাকাত বাতিল হবে। আর যদি ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত করা হয়ে থাকে তাহলে দুই রাকাত সুন্নত আদায় হয়ে যাবে এবং এক রাকাত বাতিল হবে।
ফজরের সুন্নত আদায় করার পূর্বে জামাত শুরু হয়ে গেলে করণীয়:
ফজরের দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা আদায় করা হয়নি, এ অবস্থায় যদি জামাত শুরু হয়ে যায় এবং এ ধারণা থাকে যে, সুন্নত আদায় করাও জামায়াতের শেষ বৈঠকের তাশাহুদ এর শরীক হতে পারবে , তাহলে সুন্নত আদায় করে জামাতে অংশ নিবেন। কারণ ফজরের দুই রাকাত সুন্নতের ব্যাপারে রয়েছে। জামাত শুরু হয়ে গেলে মসজিদের বারান্দায় কিংবা মসজিদের কোন কিছু আড়ালে দাঁড়িয়ে সুন্নত নামাজ আদায় করে নিবে।
কাতারের মাঝে দাঁড়িয়ে সুন্নত আদায় করা অথবা মসজিদে কোন আওয়াজ ছাড়া নামাজ আদায় করা মাকরুহের তাহরীমী। সুন্নত আদায় করে জামাতের শেষ বৈঠকে তাশাহুদে অংশগ্রহণ করা যাবে না এরূপ আশঙ্কা থাকলে সুন্নত ছেড়ে দিয়ে জামাতে অংশগ্রহণ করা যাবে। তবে ছেড়ে দেওয়ার সুন্নত সূর্যোদয়ের পূর্বে আদায় করা জায়েজ হবে না।
সূর্য উদয় হয়ে কিছু উপরে উঠার পর হতে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত সুন্নত নামাজ আদায় করা যাবে।
ফজরের নামাজ শুরু হয়ে গেলে জামাতে শামিল হওয়ার নিয়ম:
যদি কোন মুসল্লি ফজরের জামাতে দেরি করে আসে এবং এসে দেখে যে, ইমাম সাহেব নামাজে দাঁড়িয়ে আছেন অথবা এক রাকাত আদায় হয়ে গেছে অথবা রুকুতে বা সেজদায় গিয়েছেন অথবা বসে তাশাহুদ পাঠ করছেন তাহলে জামাতের তৎক্ষণাৎ শামিল হবে। ইমাম সাহেব যদি রুকু অবস্থায় থাকেন, তাহলে রুকুতেই অংশগ্রহণ করবে, ইমাম সাহেব যদি বসে তাশাহুদ পাঠ করা অবস্থায় থাকেন তাহলে তাশাহুদ এই অংশগ্রহণ করবে। এমন তা অবস্থায় জামাতে ইমামের সাথে অংশগ্রহণ করার নিয়ম হচ্ছে, মাসবুক মুক্তাদী দাঁড়িয়ে ইমাম সাহেবের সাথে নামাজ আদায় করার নিয়ত করে হাত উঠায় আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধবে।ইমাম সাহেবকে যদি নামাজে কি রাত বিহীন দাঁড়ানো অবস্থায় পায় তাহলে হাত বাধার পর সানা পাঠ করে নিবে।
জামায়াতের ছুট যাওয়া রাকাত আদায় করার নিয়ম:
মাসবুক মুসল্লি যে কয়েক রাকাত ইমাম সাহেবের সাথে পায়নি সে কয় রাকাত মুন ফারিদ অর্থাৎ একাকী নামাজ আদায়কারী মুসল্লির মত ছানা, আউযুবিল্লাহ, ও কিরাত সহ আদায় করবে। আর ওই সমস্ত রাকাতে সে যদি কোন ভুল করে থাকে তাহলে সাহু সেজদা দিতে হবে।
ফজর নামাজের ওয়াক্ত কখন শুরু হয়?
রাতের শেষে পূর্বাকাশে উপরে- নিচে একটি লম্বা সাদা রেখা প্রকাশ করেন। এ রেখা দেখা যাওয়ার সময় কে সুবেহ সাদিক বলে। সাদা রেখা বিলীন হয়ে পুনরায় অন্ধকার প্রকাশ পায়। এর অল্পক্ষণ পর আকাশে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃতি সাদা রং দেখা দেয়।এই সাদা রং প্রকাশের সময় থেকে সুবহে সাদেক শুরু হয়। সুবহে সাদেক হলে বুঝতে হবে ফজরের ওয়াক্ত হয়েছে এবং সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত। পূর্ব আকাশে সূর্যের সামান্য কিনারা দেখা দিলে ফজরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়।
অবশেষে আমরা জানতে পারলাম যে ফজরের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় এবং ফজরের ওয়াক্ত কত এবং কখন শুরু হয়। যদি আপনাদের কোথাও বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে নিজের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাবেন।