google-site-verification=YA0d_Eb5tJKkqhI6Vt7qJIXkplNVvbnoO5O5JjptJDs
Bengali

ষাট গম্বুজ মসজিদ কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কোথায় খাবেন

ষাট গম্বুজ মসজিদ বিশ্বের ইতিহাসে একটি ঐতিয্যবাহী স্থান এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি শীর্ষ পর্যটন গুলোর মধ্যে একটি। এটি সুলতানের আমলে বিশ্বের একটি ঐতিয্যবাহী একটি মসজিদ। এটি বর্তমানে বাগেরহাট জেলার তিন মাইল পশ্চিমে অবস্থিত। এটি সুলতানের আমল থেকে বৃহত্তম মসজিদ হিসেবে পরিচিত। এটি ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে সুন্দর একটি সৃতিস্তম্ভ মসজিদ হিসেবে বর্ননা করা হয়েছে। এই ষাট গম্বুজ মসজিদটি খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। এই মসজিদের আয়তন ১৬০ ফীট দীর্ঘ এবং ১০৮ ফুট প্রস্ত। তুঘলক স্টাইলের জন্য এটি আরো সুন্দর ও দৃষ্টিনান্দ হয়ে উঠেছে। এখানকার এই মসজিদটিতে দিনে পাঁচবার করে প্রার্থনা করা হয়।

মসজিদটির কিছু ইতিহাস

এই মসজিদটি পঞ্চদশ শতাদ্বীর মাঝামাঝি সময়ে বাগেরহাট জেলার সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ বনে খান জাহান নামে এক সাধু মুসলিম উপনিবেশ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তিনি সুলতান নাসিরউদ্দিন শাহের শাসনামলে এটিকে সাধু সংঘ হিসেবে প্রচার করেছিলেন, ততদিনে খান জাহান আলী এই শহরটিকে এক ডজনেরও বেশি মসজিদ দ্বারা সজ্জিত করেছিল। এই মসজিদের কাজ শুরু হয়েছিল ১৪৪২ সালে এবং নির্মানের কাজ শেষ হয়েছে ১৪৯৯ সালে।

মসজিদের চারপাশে যা যা দেখতে পাওয়া যায়

ঘোড়া দিঘি

সাধু ওলুগ খান জাহান এই বাগেরহাট জেলায় বেশ কয়েকটি দিঘিখনন করেছিল তার মধ্যে ঘোড়া দিঘি একটি অন্যতম দিঘি। এই বিশাল জলাশয়টি এই ষাট গম্বুজ মসজিদের পশ্চিম পাশে অবস্থিত। খান জাহান আলী এই অঞ্চলটিতে ইসলাম প্রচার করেছিল। তখন এই অঞ্চলে প্রচুর পানির সংকট দেখা দেয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি এই মসজিদের পাশে বিশাল ট্যাঙ্কটি খনন করেছিলেন। আর তখন থেকে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা পানীয় জলের নিখর উৎসাহ হয়ে উঠে। অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে যে এই ঘোড়া দিঘির পাশে অনেক গুলো ঘোড়া বাধা ছিল সে জন্য এই দিঘির নাম গোড়া দিঘি নামে পরিচিত। এই পুকুরটিতে অনেক গুলো কুমিরের বাস ছিল। কিন্তু কোন দিনও এরা কারো ক্ষতি করেনি। অনেকে এই কুমির গুলো কে প্রতিদিন খাবার খাওয়াতো।

জাদুঘর

এই মসজিদটির পূর্ব কোনে এই বিশাল আকারের জাদুঘোরটি অবস্থিত।এটি ১৯৯৫ সালে ইউনস্কোর তহবিলের সাহায্যে খান জাহান আলী এই সুন্দর জাদুঘরটি তৈরি করেছে। এই জাদুঘরটি পুরো বাগেরহাট জেলার সংগৃহীত সমস্ত নিদর্শনগুলো প্রদর্শন করে। এটিতে তিনটি গ্যালারি রয়েছে যেটিতে করে ইসলামের কিছু সংস্কৃতির ফলক দেখানো হয়েছে।

ষাট গম্বুজ মসজিদ

এই ষাট গম্বুজ মসজিদটি পোড়ামাটি এবং পাথর দ্বারা নির্মিত মসজিদটি ১৬৮ ফুট দীর্ঘ এবং ১০৮ ফুট প্রস্ত দৈর্ঘ্যের প্রাচীর সহ। এই মসজিদের ছাদে ৭৭ টি ছোট গম্বুজ দিয়ে মোড়ানো। এই মসজিদের চার কোনে চারটি টাওয়ারের পাশাপাশি ছোট গম্বুজ রয়েছে। এটা বিশ্বাস করা হয়েছিল যে যারা এটি নির্মান করেছিল তারা ইট দিয়ে এটি তৈরি করতে পারেনি। সিলিং সর্মথনকারী পাথরের তৈরি ছিল। বাগেরহাটের প্রত্নতান্ত্বিক গবেষক গোলাম ফেরদৌস বলেছেন যে এই মসজিদটি চৌদ্দ ও পঞ্চদশ শতকের দুর্দান্ত শৈলীশিল্পের পরিচয় দেয়। এটি বাংলাদেশের সাহিত্য শ্বিল্পের মধ্যে একটি  সুন্দর নিদর্শন। এটি উজবেকিস্তানের বিবি খানম মসজিদের সাদৃশ্যে নির্মিত । এই মসজিদের ইমাম ছিল হেলাল উদ্দিন। এই স্থানে খান জাহান আলীর দরবার হিসেবে কাজ করেছিল। প্রত্নতান্ত্রিক সূত্রে জানা গেছে ১৯৩৩ সালে ব্রিটিশরা এবং পরে পাকিস্তান সরকার এই মসজিদের প্রথম মেরামত কাজ শুরু করে। আবার ২০১৪ সালে এটিকে এশীয়ার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আবার মেরামত করেছিল এবং প্রত্নতান্ত্রিক বিভাগ নিয়মিত রক্ষনাবেক্ষন করে আসছিল।

যাতায়াত

এটি ঢাকা থেকে বাগেরহাটের মধ্যে সড়কের প্রায় দুরুত্ব ৪৩৭.৩ কিলোমিটার। আপনারা ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে করে কাগেরহাটে যেতে পারেন। বাগেরহাটে যেতে এসি বা নন এসি বাসে করে যেতে পারেন। কিন্তু আপনারা যারা একটু আয়েশি ভাবে যাতায়াত করতে চাইলে লঞ্চে করে যেতে পারেন। কিন্তু দু:খের সংবাদ এটিযে সেখানে শুধু দুই টি হোটেলের ব্যবস্থা রয়েছে। সেই কথাটি মাথায় রেখে আপনাদের সেখানে যেতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button