এশার নামাজ কত রাকাত নামাজের নিয়ত এবং কীভাবে পড়তে হয়
এশার নামাজ কত রাকাত ও কি কি?
হাদিস অনুসারী এশার ফরজ নামাজ চার রাকাত, যা সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে আবশ্যিক পড়ার জন্য বলা হয়েছে।নামাজ পড়ার পূর্বে চার রাকাত সুন্নত ও ফরজ নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা সহ এশার নামাজ সর্বমোট ১০ রাকাত।
এখন অনেকের মধ্যে দ্বিধা রয়েছে যে এশার নামাজ ১৫ রাকাত। তবে কিভাবে এশার নামাজ কয় রাকাত এই বিষয়টিও আপনাদের সামনে পরিষ্কার করব এবং কেন লোকেরা এমনটি মনে করেন তা বুঝতে পারবেন।
এশা চার রাকাত সুন্নত নামাজ:
আমরা সবাই কমবেশি জানি এশার ফরজ নামাজের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে। তবে এটা ঐচ্ছিক নামাজ। পড়লে সোয়াব রয়েছে এবং না পড়লে কোন ধরনের গুনাহ হবে না।
এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ:
চার রাকাত ফরজ অংশটি ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করতে হয়। তবে একান্তই কোন অসুবিধা থাকলে নিজে নিজে পড়ে নেয়া যায় যে কোন স্থানে।
তবে জামাতে এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতে পারলে 27 গুণ বেশি সাওয়াব পাওয়া যায় হাদিসে উল্লেখিত আছে ।
এশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজ:
জামাত চার রাকাত ফরজ নামাজের পর, দুই রাকাত এশার সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ রয়েছে। এই দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা পড়া আবশ্যক।
মূলত এশার ফরজ নামাজ চার রাকাত। ফরজের পূর্বে সুন্নত চার রাকাত। এবং ফরজের পর দুই রাকাত সুন্নত মুয়াক্কাদা সহ এশার নামাজ সর্বমোট দশ রাকাত।
এই দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) নিজ জীবদ্দশায় কখনো ছাড়েননি, তাই আমাদেরও ছাড়া উচিত নয়।
দুই রাকাত নফল নামাজ:
এশার নামাজে পরবর্তী অনেকেই দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে থাকেন। নফল নামাজ নিজে একটি নামাজ এবং এই নামাজ পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় উল্লেখ করা নেই।
শুধুমাত্র মাকরূহ সময় ব্যতীত আপনি যেকোনো সময় নফল নামাজ আদায় করতে পারবেন্
তাই এই নামাজকে কোনভাবে এশার নামাজের সাথে যুক্ত করা যায় না।
এই দুই রাকাত নফল নামাজকে অনেকেই এশার নামাজের সাথে যুক্ত করে হিসাব করে থাকেন।
এশার নামাজের সাথে বেতের নামাজ আদায়:
আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি এশার নামাজের পরপরই তিন রাকাত বেতের নামাজ আদায় করা হয়।
তবে হাদিসে পাওয়া যায় বেতের নামাজ নিজে একটি নামাজ, এশার নামাজের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।এটি পড়া নির্দেশ মূলত রাতের শেষ হয়ে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজের পর করা উত্তম।
যারা শেষ রাতে ঘুম থেকে উঠতে পারবেন না বা অন্য কোন সমস্যা রয়েছে তারা এশার নামাজের পর পর এই বেতের নামাজ আদায় করতে পারবেন।হাদিস অনুসারে বিতরের নামাজ এক রাকাত, তিন রাকাত, পাঁচ রাকাত, সাত রাকাত পড়া যায়।তাই আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন বেতের নামাজে এশার নামাজের অংশ নয়।
এশার নামাজের সময় শুরু ও শেষ:
দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে এশার নামাজটি হচ্ছে সর্বশেষ নামাজ। দিনের চতুর্থ নামাজ আদায় করার পর পরে এশার নামাজের সময় শুরু হয়ে যায়।আমরা জানি দিনের শেষ নামাজ হচ্ছে এশার নামাজ। এশার নামাজের শেষ সময় মধ্যরাত পর্যন্ত।তবে যদি কোনো কারণে নির্ধারিত সময় এশার নামাজ পড়া সম্ভব না হয় তবে ফজরের সময় শুরু পূর্বে পর্যন্ত এশার নামাজ পড়া যায়।
তবে রাত্রের প্রথম দুইভাগের মধ্যে এশার নামাজ পড়ে নেওয়া উত্তম।কেননা রাত্রে তৃতীয় ভাগ শুরু হওয়ার সাথে সাথে ফজর নামাজের সময় শুরু হয়ে যায়।
তবে মুসাফির অবস্থায় থাকলে ইসলামের বিধান অনুযায়ী এশার চার রাকাত ফরজের নামাজ সংক্ষিপ্ত করে দুই রাকাত আদায় করার নির্দেশ রয়েছে।তারপর মুসাফির শুধুমাত্র বিতরের নামাজ আদায় করবেন।
এশার নামাজ পড়ার নিয়ম;দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে প্রতিটি নামাজেই ঐচ্ছিক এবং আবশ্যিক নামাজ নামে ভিন্ন ভিন্ন অংশ রয়েছে।আপনার হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় থাকলে আপনি সফল নামাজ পড়তে পারেন কোন সমস্যা নেই।
হাদিসে বর্ণিত রয়েছে যদি কোন ব্যক্তি সময়ের অভাবে ঐচ্ছিক নামাজগুলো পড়তে না পারে তবে তাকে গুনাগার হিসেবে গণ্য করা হবে না।যদি সে নামাজ গুলি পড়তে পারে তবে তার জন্য তাকে নেকি প্রদান করা হবে।
তাই আপনার হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় থাকলে এশার নামাজ পড়ার নিয়ম হচ্ছে প্রথম চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করুন, তারপর জামায়াতের সাথে চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করুন, তারপর দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ আদায় করে অন্যান্য নামাজগুলো পড়ুন।
সবশেষে বলতে পারি আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লাগে এবং আপনারা নামার সম্পর্কে অন্যান্য কোন কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন।